শীত নিঃসন্দেহে উপভোগ্য ঋতু হলেও শীতে গলা ব্যথা খুব সাধারণ একটি সমস্যা। কনকনে ঠান্ডা বাতাস গায়ে লাগলেই খুব সহজেই গলা ব্যথা হয় বা গলা বসে যায়। তাই সবারই জানা থাকা উচিত গলা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়। ইন্টারনেটে খুঁজলেই আপনি গলা ব্যথা কমানোর বিভিন্ন কৌশল পেয়ে যাবেন। তবে এর মধ্যে কোনটি কার্যকরী তা খুঁজে পাওয়া খুবই মুশকিল। তাই আজ আমরা দেখাতে চলেছি ৫ মিনিটে গলা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়। চলুন জেনে আসি কার্যকরী কয়েকটি গলা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় :-
গলা ব্যথা হলে করণীয় কি
ভেষজ চা
গলা ব্যথা হলেই আমরা চা পান করতে পছন্দ করি। আবহাওয়া পরিবর্তন ও দূষণের কারণে গলা ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে গোলমরিচ,তুলসি পাতা, আদা এবং লবঙ্গের মতো মসলা দিয়ে চা তৈরি করে পান করতে পারেন। এই মসলাগুলো ব্যবহার করে চা পান করলে কাশি, সর্দি, গলা ব্যথার মতো সমস্যা ঠিক করতে কাজ করে।
হলুদ দুধ
হলুদ একটি শক্তিশালী অ্যান্টিএক্সিডেন্টের উৎস। গলা ব্যথা কমানোর জন্য প্রাচীনকাল থেকেই হলুদ দুধের ব্যবহার হয়ে আসছে। সাধারণ সর্দি এবং গলা ব্যথার জন্য হলুদ দুধ খুব ভালো কাজ করে।এক গ্লাস দুধে এক চা চামচ হলুদ দিয়ে গরম করে নিন। ঘুমানোর আগে হলুদ দুধ পান করুন। এতে অনেক উপকার মিলবে।গলা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় হিসেবে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
আদা চা
আদা চা গলা ব্যথা কমানোর একটি কার্যকরী ও জনপ্রিয় ঘরোয়া উপায়। সাধারণ ভাবেই আদা চা বানাবেন। তবে আদা চা এর স্বাদ বাড়াতে চাইলে গোলমরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। আদায় রয়েছে অ্যান্টি এক্সিডেন্ট যা গলা ব্যথা কমাতে দারুন কাজ করে।

গলা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
গোল মরিচ
গলা ব্যথা কমাতে গোলমরিচের ব্যবহার অনেক আগে থেকেই হয়ে আসছে। গলা ব্যথা কমাতে গোল মরিচ আস্তও খেতে পারেন বা চিনি দিয়েও খেতে পারেন। তবে মধুর সাথে গোলমরিচ খেলে খুব ভালো কাজ করে।
তুলসি পাতা
গ্রামের মা চাচিরা অনেক আগে থেকেই সর্দি-কাশি, কফ, গলা ব্যথা কমাতে তুলসির ব্যবহার করে থাকেন। এক্ষেত্রে পানি গরম করে তাতে তুলসি পাতা দিয়ে কিছু সময় ফোটান। এরপর আদা, লবণ ও গোলমরিচ মিশান। ফোটানো হয়ে গেলে ছাকনি দিয়ে ছেঁকে গরম পানিটুকু খেয়ে ফেলুন।এটি গলা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে সবচেয়ে অন্যতম

লবণ পানির গার্গল
ধুলি কণা বা দূষণের সংস্পর্শে এলে আমাদের গলা সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়ে। এতে বুক ভারী, বুকে ব্যথা হওয়া বা গলা ব্যাথার মত সমস্যা হতে পারে। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের জন্য গরম পানির সাথে লবণ মিশিয়ে গার্গল করতে পারেন। নোনতা জলের গার্গেল ফোলা ও অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে।
আইস থেরাপি
তাৎক্ষণিক গলা ব্যথা কমাতে গরম পানির তুলনায় বরফের টুকরো বা ললিপপ বেশি কার্যকরী। এটি শরীরে আদ্রতা জোগাতে সাহায্য করে। ঠান্ডা আইসক্রিম টনসিলের ফোলা ভাব ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
যষ্টিমধু
যষ্টিমধুর ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকে হয়ে আসছে। যেসব মানুষ নিজেদের কন্ঠের প্রতি সচেতন তাদের খাদ্য তালিকায় যষ্টিমধু অবশ্যই থাকে। এক টুকরা যষ্টি মধু চুষলে গলা ব্যথা থেকে সহজেই পরিত্রাণ পাওয়া যায়।

গলা ব্যথার কারণ :-
গলা ব্যথার জন্য নির্দিষ্ট কোন ঔষধ খাওয়ার আগে গলা ব্যথার কারণ এবং লক্ষণ গুলি বোঝা অত্যন্ত জরুরী। বিভিন্ন কারণে গলা ব্যথা হয়ে থাকে।
গলা ব্যথার সাধারণ কারণ
শুষ্ক বায়ু: শুষ্ক বায়ুর জন্য গলা ব্যথা হতে পারে। বিশেষ করে শীতকালে উত্তপ্ত অন্দর পরিবেশে, গলা শুকিয়ে যেতে পারে এবং ব্যথা হতে পারে।
এলার্জি: পোষা প্রাণী খুশকিতে, ধুলিকণা ও পরাগ ইত্যাদির এলার্জির প্রতিক্রিয়া গলা ব্যথা এবং গলা জ্বালা হতে পারে। ব্যাকটেরিয়া ইনফেকশন :- ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হলে গুরুতর গলা ব্যথা হয়, গিলতে অসুবিধা হয় এবং লিন্ফ নোড ফোলে যেতে পারে।
আরও পড়ুন:- নবজাতকের চর্মরোগ হলে করণীয় কী?
গলা ব্যথা হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত
গলা ব্যথা হলে ঔষধ খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসক আপনার গলা ব্যথার কারণ এবং অবস্থার উপর ভিত্তি করে ঔষধ দিবেন। তবে এমন কিছু ঔষধ আছে যা গলা ব্যথা সামগ্রিকভাবে কমাতে সাহায্য করতে পারে তা নিম্নে দেয়া হলো:-

লোজেঞ্জেস : এটি একটি স্থানীয় চেতনা নাশক। যা গলা ব্যথা এবং কাশি সামগ্রিকভাবে কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া রয়েছে গলা স্প্রে, মৌখিক ব্যথা নাশক ইত্যাদি। যে কোনো ঔষধ সেবনের পূর্বে অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শ নিবেন।
Ponamas।পোনামাছ।গলা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়।
ছবি সংগ্রহীত।